আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্বের মাধ্যমে সবার সামনে নিজের গুরুত্ব বাড়িয়ে তুলবেন যেভাবে
শুধুমাত্র বিপুল পরিমাণে টাকা-পয়সা কিংবা সম্পদের পাহাড়ের মালিক হলেই অন্যের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠা যায় না। নিজেকে অন্যদের কাছে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ করে তোলার জন্য ব্যক্তির মধ্যে বিশেষ কিছু গুণ বা বৈশিষ্ট্য থাকতে হয়। আর এইসব গুনবা বৈশিষ্ট্য অর্জন করতে পারলেই আপনি নিজেকে অন্যের কাছে সহজেই গুরুত্বপূর্ণ করে তুলতে পারবেন।
সবার সামনে নিজের গুরুত্ব বাড়ানোর কৌশল
জীবনে সফল হতে হলে অবশ্যই নিজের গুরুত্ব বাড়ানো অত্যন্ত জরুরী। অন্যের মাঝে নিজেকে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে জায়গা করে নেওয়ার মাধ্যমে জীবনের সফলতা ধরা দেয়। আজকের পৃথিবীতে যারা সফল হয়েছে তারা অনেক আগে থেকেই সমাজের কাছে নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছেন। যা তাদের আজকের এই পর্যায়ে আসতে সাহায্য করেছে।
জীবনে সফল হওয়ার জন্য কেউ যখন কাজ করে থাকে, ঠিক তখন থেকেই তাকে নিজের গুরুত্ব বাড়ানোর দিকে বিশেষভাবে নজর দিতে হয়। আর তা না হলে পরবর্তীতে নিজেকে সমাজের অন্যদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ করে তোলাটা অনেক কঠিন কাজ হয়ে পড়ে। সুতরাং নিজেকে সফল হতে হলে এবং সবার সামনে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলতে চাইলে এখন থেকেই আপনাকে কিছু কৌশল বা উপায় অবলম্বন করে চলতে হবে।
আত্মসম্মান বাড়ানোর কিছু টিপস
চলুন তবে দেখে নেয়া যাক কিভাবে নিজের মধ্যে ধনীদের মতো আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব গড়ে তুলে সবার মাঝে গুরুত্বপূর্ণ করে তোলা যায় সেই সম্পর্কে জেনে নিই। কেননা সবার সামনে নিজের গুরুত্ব বাড়ানোর বেশ কয়েকটি কৌশল রয়েছে। যার ভিতর থেকে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি কৌশল আপনাদের সাথে শেয়ার করছি।
১. নিজের ব্র্যান্ড পার্সোনালিটি তৈরি করতে হবে
নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ করে তোলার প্রথম ধাপ হচ্ছে নিজের ব্যক্তিত্বকে ঠিকঠাক করে চলানো। অর্থাৎ নিজের জন্য একটি ব্র্যান্ড পার্সোনালিটি তৈরি করতে হবে। আপনার মধ্যে যদি কোন বিশেষ বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন ব্যক্তি না থাকে তাহলে আপনি নিজেকে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ করে তুলতে কখনোই পারবেন না। সুতরাং আপনার ব্যক্তিত্বকে বিশেষায়িত করে তোলাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেননা সবাই যেন বুঝতে পারে আপনি কেমন ব্যক্তিত্বের অধিকারী একটা মানুষ। আর একবার আপনার ব্যক্তিত্ব সবাই বুঝে ফেললে তখন তারা আপনার সাথে সেভাবেই আচরণ করবে শুরু করবে। সুতরাং সফল হওয়ার জন্য শুরু থেকে নিজের সঠিক ব্যক্তিত্বের দিকে বিশেষভাবে নজর দিতে হবে।
২. অযথা বেশি স্মার্টনেস না দেখানো
অনেকেই আছে যারা নিজের ব্রান্ড পার্সোনালিটি তৈরি করতে গিয়ে ওভার স্মার্টনেস দেখিয়ে ফেলে। এতে করে হিতে বিপরীত হয়ে যায়। এজন্য ব্র্যান্ড পার্সোনালিটি তৈরি করতে গিয়ে অতি স্মার্টনেস দেখানো যাবে না। এটি একটি খুবই সাধারণ ভুল। এবং বেশিরভাগ মানুষই এই ভুলের ফাঁদে পড়ে কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনা। তাই নিজের পার্সোনালিটি বাড়াতে গিয়ে এই ভুলটি থেকে অবশ্যই সাবধান হতে হবে।
অযথা যেখানে সেখানে ইংরেজিতে কথা বলে কথার মধ্যে নানান রকম জারগণ ব্যবহার করা যা অধিকাংশ লোকেই বুঝতে পারে না এসব হচ্ছে অতিরিক্ত স্মার্টনেস এর লক্ষণ। তাই যেখানে যে আচরণ দরকার সেখানে সে রকম আচরণ করা উচিত। আপনি যখন কথা বলবেন তখন আপনার শ্রোতা কারা তাদের বোঝার ক্ষমতা কতটুকু ইত্যাদি বিবেচনা করে কথা বলা উচিত। যেখানে যতটুকু প্রয়োজন সেখানে কেবল ততটুকু ইংরেজি এবং যারগণ ব্যবহার করতে হবে। আর আপনি যদি এটি শুরু থেকেই এই বিষয়ে সাবধান হন তাহলে আপনার ব্যক্তিত্বই সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠবে। এবং আপনি যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবেন সবার কাছে।
আরো পড়ুন মাত্র পাঁচ অভ্যাসেই দূর হবে মানসিক সমস্যা https://www.sbdfoodtips.xyz/2023/03/Tips-to-overcome-depression.html
৩. সর্বমুহুর্তে ভালো শ্রোতা হওয়া
সব সময় কথা বলে নিজের পার্সোনালিটি তৈরি করা যায় না। কখনো কখনো শ্রোতা হয়েও নিজের পার্সোনালিটি তৈরি করা সম্ভব। শ্রোতা হওয়া এটি একটি সহজ কাজ, তবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর নিজেকে সবার সামনে গুরুত্বপূর্ণ করে তোলার জন্য একজন ভালো শ্রোতা হওয়া অত্যন্ত জরুরী। অন্যের কথা ধৈর্য ধরে শোনার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। বিশেষ করে আপনি যদি অন্যের কথা ঠিক মত না শোনেন আর সেটা যদি তারা বুঝতে পারে তবে তারাও আপনার সাথে একই রকম শুরু করবে। অর্থাৎ আপনার কথাও কেউ পুরোপুরি শুনবে না। আর এমনটা যদি ঘটে তাহলে আপনার গুরুত্বই আর কারোর কাছে থাকবে না। সুতরাং আপনাকে সবার সামনে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে তুলে ধরতে হলে অবশ্যই একজন ভালো শ্রোতা হতে হবে।
৪.নিজেকে অতিরিক্ত এক্সপোজ না করা
নিজের পার্সোনালিটি বজায় রেখে সমাজের চোখে নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ করে তোলার জন্য এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ধাপ। নিজেকে কখনোই অন্যের কাছে অতিরিক্ত এক্সপোজ করা যাবে না। অর্থাৎ সবার কাছে নিজেকে অতি সহজলভ্য করে ফেলা যাবে না। আপনি যেন অকারনে সবার কাছে সহজলভ্য হয়ে না পড়েন সেজন্য শুরু থেকে খেয়াল রাখতে হবে। হাত বাড়ালেই যেন আপনার দেখা না পাওয়া যায় এটা নিশ্চিত করতে হবে। আবার একই সাথে সঠিক সময় সঠিক জায়গায় আপনাকে যেন পাওয়া যায় সে প্রস্তুতিও রাখতে হবে।
সর্বদা এটা মনে রাখা উচিত যে সবাই যদি খুব সহজে আপনার কাছে পৌঁছাতে পারে তাহলে আপনার গুরুত্ব সেভাবে তৈরি হবে না । আবার আপনি যেন একেবারেই ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে না যান সে বিষয়টাও দেখতে হবে। নইলে নিজের গুরুত্ব বজায় থাকবে না। সুতরাং নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে গড়ে তুলতে চাইলে আপনাকে নিজের জন্য এমন একটি ব্যবস্থা অবশ্যই করতে হবে। যাতে আপনার কাছে পৌঁছানোটা একেবারে সহজ না হয়। আবার একেবারে কঠিন না হয়। অর্থাৎ আপনার নিজের জন্য খুব ভালো একটা চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স থাকতে হবে।
৫.অন্যকে যথাযথ গুরুত্ব দেয়া
নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ করে তোলার জন্য সবচেয়ে কার্যকর সিক্রেটটি হচ্ছে অন্যকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেয়া। অর্থাৎ আপনি যদি নিজের গুরুত্ব পেতে চান তাহলে অন্যকে যথাযথ গুরুত্ব দিতে হবে। বিষয়টা গিভ এন্ড টেক এর মত। সর্বদা এটি মনে রাখা উচিত যে, আপনার কাছ থেকে যদি কেউ যথেষ্ট গুরুত্ব না পায় তাহলে সেও আপনাকে আপনার উপযুক্ত গুরুত্ব দিবে না। সুতরাং অন্যকে কোনভাবে ছোট করে কথা বলা যাবে না। এবং সবাইকে তাদের প্রাপ্য গুরুত্ব দেয়ার অভ্যাস নিজের মধ্যে করে তুলতে হবে। অর্থাৎ সবাই যখন দেখবে আপনি তাদের যথেষ্ট পরিমাণে গুরুত্ব দিচ্ছেন তখন তারাও আপনাকে আপনার প্রাপ্য গুরুত্ব দিতে কখনো কার্পণ্য করবে না। কিন্তু নিজে অন্যকে গুরুত্ব না দিয়ে অন্যের কাছ থেকেও গুরুত্ব আশা করা যাবে না।
Disclaimer
আমাদের আজকের আলোচনা এ পর্যন্তই। আশা করি এই বিষয়ে আপনারা একটু হলেও বুঝতে পেরেছেন। কিভাবে নিজের গুরুত্ব বাড়ানো যায় সবার কাছে সে সম্পর্কে। ভালো লাগলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট করে জানাবেন। সেইসাথে অন্য কোন জিজ্ঞাসা থাকলে অবশ্যই জানাবেন ।এতক্ষণ ধরে লেখাটি কষ্ট করে পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।